আমি ২০টি আসনে দাঁড়ালে সবগুলোতে পাস করব: ফারুক
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া অভিনেতা ফারুকের রাজনীতিতে হাতেখড়ি স্কুলজীবন থেকেই।
অংশ নিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধে। এর আগে-পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাহচর্য পেয়েছেন।
সেই ফারুক পরবর্তী সময়ে যোগ দেন আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে। একাদশ জাতীয় সংসদ
নির্বাচনে দলটির হয়ে লড়তে ঢাকা-১৭ আসন থেকে মনোনয়নও পেয়েছেন। কিন্তু সেই আসনে প্রার্থী আরও দুজন।
এ নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে চলা আলোচনা ও প্রাসঙ্গিক বিষয়ে কথা বলতে ২৮ নভেম্বর রাতে এ অভিনেতার মুখোমুখি হয়। সেই আলাপে উঠে আসে নির্বাচন নিয়ে তার ভাবনার কথা।
গত ২৮ নভেম্বর ছিল মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। নিয়ম মেনে সেদিন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ফারুক। এরপর জানা গেল,
একই আসনে জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদও নির্বাচন করবেন।
শুধু তাই নয়, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদেরও এই আসন থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।
এই আসনে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের প্রার্থী কে হচ্ছেন, তা নিয়ে চলছে আলোচনা। কেউ কেউ বলছেন, শেষ পর্যন্ত নায়ক ফারুক ও আবদুল কাদের খান বাদ পড়তে পারেন। এই আসন থেকে লড়বেন জাপা চেয়ারম্যান।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে ফারুক বলেন, ’মনোনয়ন জমা দিয়েছি। এখন আমাকে নিয়ে নানান কথাই হবে, তা না হলে ফারুক কেন!
আমাকে স্যাবোটেজ করার জন্য পাঁচ-ছয় লাখ লোক আমার পিছনে থাকবে, এটাই স্বাভাবিক।’
’বাংলাদেশে যত লোক আমারে ভালোবাসে, আমি যদি ২০টা আসনে দাঁড়াই, তাহলে ২০টা আসনেই পাস করব। মানুষ যে আমাকে এত ভালোবাসে, আমি এর আগে এতটা টের পাইনি।’
গুলশান-বনানী-ঢাকা সেনানিবাস-ভাষানটেকের কিছু অংশ নিয়ে ঢাকা-১৭ আসন। গত রবিবার বিকেলে এই আসন থেকে আওয়ামী লীগের হয়ে নির্বাচন করার জন্য ফারুককে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়।
কয়েক মাস ধরে শোনা যাচ্ছিল, চলচ্চিত্রের ’মিয়া ভাই’ খ্যাত ফারুক এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবেন। শুরু থেকেই তার স্বপ্ন ছিল বাপ-দাদার এলাকা গাজীপুরের কালীগঞ্জকে ঘিরে। এরপর দেখা গেল ঢাকা-১৭ আসন থেকে তাকে দেওয়া হয়েছে মনোনয়ন।
ফারুকের ভাষ্য, বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার যে আদর্শ ধারণ করে তিনি পথ চলছেন, সেটা এমন জায়গায় চলে গেছে, তিনি যদি মনোনয়ন না কিনতেন বা
নির্বাচনে প্রার্থী না হতেন, তা বুঝতে পারতেন না। এ নিয়ে তার বক্তব্য, ’কে কী বলল, আমি এইসব বুঝি না। আমি অ্যাডামেন্ট (অনড়)। ওইসব কথাই আমি শুনতে চাই না। আল্লাহ যদি থেকে থাকে, আমি আছি। সোজা কথা।’
দলের পক্ষ থেকে মনোনায়ন পাওয়ার পরে প্রার্থীতার বিষয় কিছু জানানো হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ’কিছু জানানো হয়নি।’
মনোনয়ন না পেলে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করবেন কি না। ফারুক বলেন, ’কেন আমি স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করব? করলে আওয়ামী লীগ থেকেই করব। আমাকে আপা (শেখ হাসিনা) ডেকে যদি বলে, ’’তোর এই এই প্রবলেম, আমি তোকে মনোনয়ন দিতে পারব না’’, ঠিক আছে তাহলে।’
’তবে আমি এক জায়গায় আছি, থাকব। সারাটা জীবন আমি এই জায়গাতেই কাটিয়ে দিয়েছি। এখান থেকে সরে গিয়ে নির্বাচন করার ক্ষমতা আমার নাই।
সারা জীবন আমি একটি পার্টি করেছি। আমি আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা ছাড়া অন্য কিছু বুঝি না।’
ফারুক জানান, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর তার আদর্শকে বুকে নিয়ে রাজপথে যারা ছিলেন, তার মধ্যে তিনিও ছিলেন।
’কিন্তু এতদিন পরও কেন আমি সংসদে যেতে পারি না। কারণ লোকজন পেছন থেকে টেনে ধরে। নানান কথা বলে। আমারও ভুল থাকতে পারে। সবাই তো ভগবান না।
আবার সে ভুল যে মিটমাট হবে না, তাও না’, বলেন ফারুক।
শুরুতে গাজীপুর-৫ থেকে মনোনয়ন চেয়েছিলেন ফারুক। পরে ঢাকা-১৭ থেকে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার বিষয়ে ফারুক বলেন, ’আমি শুরু থেকে বলেছি, সারা দেশের মানুষ আমাকে ভালোবাসে।
আমি দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে লড়ার যোগ্যতা রাখি। আমার ধারণা, দল এবং সভানেত্রী শেখ হাসিনা হয়তো ভেবেছেন, আমাকে ঢাকা-১৭ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হোক। নেত্রীর এই সিদ্ধান্তকে আমি শ্রদ্ধা করি।’
নির্বাচনকে সামনে রেখে নিজ ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নানা অসত্য তথ্য ইউটিউবে প্রকাশ করা হচ্ছে অভিযোগ করে ফারুক বলেন, ’আমি ইউটিউবে কিছু ভিডিও দেখছি, যেগুলো অসত্য তথ্য দিয়ে বানানো হয়েছে।’
’আমি মনে করি, সাধারণ মানুষ সে বিষয়গুলোতে সতর্ক থাকবে। সামনে নির্বাচন তো, তাই অনেকেই অনেক ধরনের কাজ করবে।’
সূত্র:প্রিয়.কম
0 মন্তব্যসমূহ