Header Ads Widget

চাহিদা বাড়লেও যোগ হচ্ছে না নতুন ট্রেন

চাহিদা বাড়লেও যোগ হচ্ছে না নতুন ট্রেন


চাহিদা বাড়লেও যোগ হচ্ছে না নতুন ট্রেন

­

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ একটি রুট চট্টগ্রাম-সিলেট। এই রুটে দুটি আন্তনগর ট্রেন পাহাড়িকা ও উদয়ন এক্সপ্রেস চলাচল করে। এর মধ্যে সর্বশেষ যুক্ত হওয়া ট্রেনটি হলো উদয়ন। ১৯৮৮ সালে উদয়ন চালুর পর গত ৩৬ বছরেও নতুন ট্রেন যোগ হয়নি এই পথে, যদিও এই রুটে আরও দুই জোড়া ট্রেনের চাহিদা আছে। শুধু চট্টগ্রাম-সিলেট নয়, ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের সোনার বাংলা এক্সপ্রেসের পর পূর্বাঞ্চলে আর কোনো আন্তনগর ট্রেন যোগ হয়নি।

চাহিদা সত্ত্বেও রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে নতুন ট্রেন যোগ না হলেও পশ্চিমাঞ্চলে একের পর এক নতুন ট্রেন চালু হচ্ছে। পুরোনো বগি সরিয়ে নতুন বগি-ইঞ্জিনও যুক্ত হয়েছে সেখানে। ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে নুরুল ইসলাম সুজন রেলমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার চার মাসের মাথায় পশ্চিমাঞ্চলে নতুন ট্রেন পঞ্চগড় এক্সপ্রেস চালু করেন। এ ছাড়া একই বছর চালু হয় ঢাকা-রাজশাহী রুটের বনলতা এক্সপ্রেস ও ঢাকা-বেনাপোল রুটের বেনাপোল এক্সপ্রেস। পশ্চিমাঞ্চলে সর্বশেষ ঢাকা-কুড়িগ্রাম রুটে আন্তনগর কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস চালু হয়। আমেরিকা থেকে আনা ৪০টি লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন) এবং ইন্দোনেশিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আমদানি করা নতুন বগিও যুক্ত করা হয় এই অঞ্চলের কয়েকটি ট্রেনে।(রেলওয়ে গ্যালারি ফেইসবুক পেইজের নিউজটি আজকের পত্রিকা থেকে নেয়া)

রেলওয়ের ২ হাজার ৮০০ কিলোমিটার রেললাইন পরিচালনা করা হয় দুই অঞ্চলের মাধ্যমে। একটি হলো পূর্বাঞ্চল, আরেকটি পশ্চিমাঞ্চল। দুই অঞ্চলের আওতায় চারটি বিভাগ রয়েছে। এর মধ্যে পূর্বাঞ্চল ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগ নিয়ে গঠিত। এই অঞ্চলের আওতায় রেলপথের দৈর্ঘ্য ১ হাজার ২৭৯ কিলোমিটার।

পশ্চিমাঞ্চল রংপুর বিভাগ, রাজশাহী বিভাগ ও খুলনা বিভাগ নিয়ে গঠিত। মূলত যমুনা নদীর পূর্ব পাশ পর্যন্ত পূর্বাঞ্চল এবং পশ্চিম পাশেরটি পশ্চিমাঞ্চল হিসেবে ধরা হয়। এই পথের দৈর্ঘ্য ১ হাজার ৪২৭ কিলোমিটার। পশ্চিমাঞ্চলে ২৮ জোড়া আন্তনগর ট্রেন রয়েছে।

অন্যদিকে পূর্বাঞ্চলে আন্তনগর ট্রেনের সংখ্যা মাত্র ২৪ জোড়া। মেইল, এক্সপ্রেস ও কমিউটার ট্রেনের সংখ্যা ৩৩ জোড়া। এ ছাড়া কনটেইনার পরিবহনের জন্য আছে চার জোড়া ট্রেন। শুধু যাত্রীবাহী ট্রেন নয়, পণ্যবাহী ট্রেনেও প্রচুর চাহিদা রয়েছে রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলে।

জানান, চট্টগ্রামের সঙ্গে পূর্বাঞ্চলের অন্যান্য জেলায় সকাল ৭টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত চারটি আন্তনগর ও তিনটি লোকাল ট্রেন চলাচল করে। দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত কোনো ট্রেন নেই। এই সময়ে চট্টগ্রাম-ঢাকা-সিলেট রুটে চারটি ট্রেন চালানো যাবে।

পূর্বাঞ্চলের বাণিজ্যিক বিভাগের হিসাবে, সর্বশেষ ২০২০-২১ অর্থবছরে পণ্য পরিবহন থেকে ১৪৫ কোটি ৫৪ লাখ টাকা আয় করে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল। কিন্তু চাহিদা সত্ত্বেও ইঞ্জিন-সংকটের কারণে পর্যাপ্ত পণ্য পরিবহন করা যাচ্ছে না। পূর্বাঞ্চলের পরিবহন বিভাগ জানায়, ইঞ্জিন-সংকটের কারণে গ্রাহককে চাহিদা অনুযায়ী পণ্য সরবরাহ দিতে না পারায় প্রতি মাসে আয় কমেছে প্রায় পৌনে ২ কোটি টাকা, বছরে ২৪ কোটি। হিসাবটি ২০১৯ সালের হলেও প্রতিবছর এর আশপাশে হয়ে থাকে।(রেলওয়ে গ্যালারি ফেইসবুক পেইজের নিউজটি আজকের পত্রিকা থেকে নেয়া)

পণ্য পরিবহন রেলের জন্য বেশ লাভজনক জানিয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, ‘পূর্বাঞ্চলে পণ্য পরিবহন থেকে আয়ের বিশাল একটি সুযোগ রয়েছে। বর্তমানে চার জোড়া কনটেইনার পরিবহন করছে। এটিকে যদি দ্বিগুণ করা যায়, তাহলে রেলের লোকসান অনেকাংশে পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব। এ বিষয়টি নিয়ে আমরা বারবার বলার পরও পূর্বাঞ্চলে ট্রেন যুক্ত হচ্ছে না।’

পূর্বাঞ্চলে যাত্রীবাহী ট্রেন বাড়াতে সেই ২০১৬ সাল থেকেই চিঠি দেওয়া হচ্ছে বলে পূর্বাঞ্চলের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, বিষয়টি গুরুত্ব দিচ্ছে না মন্ত্রণালয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, পূর্বাঞ্চলে নতুন ট্রেনের কথা মন্ত্রণালয়ে জানানো হয়েছে। তবে চাহিদাপত্র দেওয়ার বিষয়টি এখন কোন পর্যায়ে আছে, তা জানাতে পারেননি তিনি।

এসব বিষয়ে জানতে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। তবে সম্প্রতি চট্টগ্রামে পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছিলেন, ‘আমরা মিটারগেজ থেকে ব্রডগেজে শিফট করছি। ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের ব্রডগেজের কাজ শেষ হয়নি। ২০২৪-২৫ সালের মধ্যে কাজ শেষ হবে। তখন নতুন ট্রেন যুক্ত করা হবে।

আজকের পত্রিকা

ছবি - মাহমুদউল্লাহ 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ