১০০ যাত্রী নিয়ে হারিয়ে গেল ট্রেন…!!!
★★ ১৯১১ সাল ★★
ইতালির রোম শহর থেকে ১০০জন যাত্রী, ৬জন কর্মকর্তা আর ৩টি গাড়ি নিয়ে জেনেট্টি কোম্পানির নতুন একটি ট্রেন রওনা করে তার গন্তব্যে৷ পথিমধ্যে Lombard এ ১কিলোমিটার লম্বা ট্যানেল পড়ে। ট্যানেলে প্রবেশের আগেই ২জন যাত্রী লাফিয়ে পড়েন ট্রেন থেকে৷ ট্রেন ট্যানেলে প্রবেশ করে আর হারিয়ে যায় চিরতরে। মূলত সেই রেইল-লাইনটি পরিত্যক্ত ছিলো, যেখানে ট্রেন চলাচল নিষিদ্ধ।
-অনেক খোজাখুজির পরও আর সেই ট্রেনের কোনো অস্তিত্ব খুজে পায় না রেইলওয়ে পুলিশ৷ না ট্যানেলে নাহ বাহিরে কোথায়, কোনো চিহ্নই খুজে পায় না তারা।
পরবর্তীতে সেই ট্যানেলের মুখে পাথর চাপা দিয়ে তা বন্ধ করে দেয়া হয়। ২জন যাত্রী যারা লাফিয়ে পড়েছিলো, দুর্ঘটনার পর, উদ্ধারকৃত হলে তারা প্রবল মানসিক চাপের কারণে মানসিক রোগে ভুগছিলেন। তাদের মেন্টাল কন্ডিশন খারাপ ছিলো। কিন্তু পরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসেন। তারা সুস্থ হলে জানান যে, হঠাৎ করে যাত্রীরা অজানা অব্যক্ত ভয়ে অস্থির হয়ে পড়ে, আতঙ্ক শুরু হয়।
ট্রেন যখন ট্যানেলে প্রবেশ করছিলো, তার আগে ট্রেনের বগিতে তারা ধোয়া দেখতে পায়। ট্যানেলের দিকে তাকিয়ে দেখেন, সেখানে উজ্জ্বল আলো আর তারা লাফিয়ে পড়েন ট্রেন থেকে। এক সময় ট্রেনটি সেই আলোর দিকে ছুটে যায় আর মিশে যায় সেই আলোক-রশ্মিতে।(রেলওয়ে গ্যালারি পেইজের নিউজটি আনন্দবাজার থেকে নেয়া)
যুদ্ধের সময় টানেলটির মুখ ইট দিয়ে বন্ধ করে দেয়া হয় এবং পরে বিমান হামলার ফলে টানেলটি ধ্বংস হয়ে যায়। ইতালির রেলওয়ে জাদুঘরে তারা এখনও তারা সেই ট্রেন, টানেল এবং সাথে 3টি গাড়ির একটি মডেল সাজিয়ে রাখে।
★★১৯২৬ সাল★★
মেক্সিকো'র এক নাগরিক জানান যে, তিনি তার বাড়ি রেনোভ্যাশন করার সময় একটি পুরোনো ডায়েরি খুজে পান। যা একজন ডাক্তারের (পূর্বের মালিক)। সেখানে তিনি লিখেন ১৮৪৫সালের এক অদ্ভূত ঘটনা। ১০৪জন ট্রেন যাত্রী তাদের হাসপাতালে ভর্তি হয়, যাদের মানসিক অবস্থা ভালো ছিলো না। তাই তাদের একটি মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তাদের জিনিসপত্র এবং জামাকাপড় সেই সময়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল না।
তারা জানায় যে ট্রেন যোগে তারা ইতালি থেকে এসেছেন। কিন্তু মেক্সিকো'তে কিভাবে পৌছান সমুদ্র পাড়ি দিয়ে তাও ট্রেনে করে তার উত্তর তারা দিতে পারেন নি। একজনের কাছে একটি দেশলাইয়ের বাক্স পাওয়া যায় যা ১৯০৭ সালে নির্মিত হয়েছে। বাক্সটি এখনও মেক্সিকোতে রাখা আছে। রাতের বেলা তারা হাসপাতাল থেকে গায়েব হয়ে যান। তাদের আর খুঁজে পাওয়া যায় না।
★★১৯৫৫ সাল★★
বহু বছর পরে, ট্রেনটি আবার ইউরোপে হাজির। ২৯শে অক্টোবর, ১৯৫৫-এ ইউক্রেনের একটি ছোট গ্রাম জাভালিচি থেকে অদূরে পুরোনো মডেলের তিনটি গাড়ি ও পুরানো ধাঁচের একটি ট্রেন হাজির হয়েছিল। সেখানকার সিগন্যালম্যান Pyotr Ustimenko, এটিকে শব্দহীনভাবে চলতে দেখেন।
★★১৯৯১ সাল★★
রোমানিয়ার এক জঙ্গলে পরিত্যাক্ত রেল-স্টেশনে ইনভেস্টিগেশনে যান ৫জন প্যারানরমাল ইনভেস্টিগেটর। হঠাৎ একটি ট্রেন দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন তারা। কাছে গিয়ে বুঝতে পারেন যে এটি সেই হারিয়ে যাওয়া জেনেট্টি ট্রেন। একজন ট্রেনে ভিতর প্রবেশ করেন আর ট্রেন চলতে শুরু করে৷ এক সময় ধোয়ার মাঝে হারিয়ে যায় ট্রেন। সেই লোকটিকেও আর খুজে পাওয়া যায়নি।
◾ট্রেনটি নিখোঁজ হওয়ার কারণ এখনও একটি ধাঁধা। এমনি করে রাশিয়া,রোমানিয়া, পর্তুগাল, জার্মানি, ইতালি বিভিন্ন সময় এই ট্রেন দেখতে পাওয়া কথা জানায় অনেকে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবৃতিতে যারা ট্রেনটি দেখেছিলেন -ট্রেনের সব কিছু একই ছিল: যন্ত্রবিহীন 3টি গাড়ি এবং পর্দা দিয়ে জানালা বন্ধ থাকা প্রাচীন ট্রেন।(রেলওয়ে গ্যালারি - আনন্দবাজার পত্রিকা)
ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধান কি বলে…?
লক্ষণীয়, এসব খবরে ট্রেনের নাম, কোচ নাম্বার, স্টেশনের নাম, যাত্রার তারিখ, ভূ-গর্ভস্থ টানেল এর নাম, অবস্থান ইত্যাদি কিছুই জানানো হচ্ছে না।
প্রারম্ভিক স্টেশন হিসেবে রোম শহরের কথা বলা হলেও নির্দিষ্ট স্টেশনের নাম পাওয়া যাচ্ছেনা। ১৯১১ সালের কথা বলা হলেও মাস এবং দিনের কথা নাই।
ট্রেন কোম্পানি হিসেবে জানেটি’র নাম জানা গেলেও কোচ নাম্বার এবং ট্রেনটার অন্যান্য বিস্তারিত বর্ণনা পাওয়া যাচ্ছে না।
১০৪ জন প্যাসেঞ্জারের কথা জানানো হলেও কোনো প্যাসেঞ্জারের নাম কিংবা পরিচয় বলা হয়নি।
ফলে , এই রহস্যময় ঘটনা সম্পর্কে যাচাই করার কোনো উপায়ই নেই।
ইটালির উল্লেখযোগ্য রেলওয়ে এক্সিডেন্ট এর তালিকায় ১৯১১ সালের এই ট্রেন ‘উধাও’ হওয়ার কোনো উল্লেখ খুজে পাওয়া গেল না।
আনন্দবাজার পত্রিকা ও ফ্যাক্টওয়াচ অনুসন্ধান রিপোর্ট
0 মন্তব্যসমূহ