পরীমণির মতো নেচে কারাগার থেকে বের হব : বিচারককে মারধরের আসামি
গত সোমবার রাত ১১টার দিকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট অলি উল্লাহ তার স্ত্রীকে নিয়ে নগরের জিইসি মোড়ের একটি কফি শপ থেকে বেরিয়ে হেঁটে গোলপাহাড় মোড়ের দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় একটি ব্যক্তিগত গাড়ি বিচারককে ধাক্কা দেয়। তিনি এই ঘটনার প্রতিবাদ জানালে গাড়িতে থাকা পাঁচজন নেমে তাকে কিলঘুষি মারতে থাকেন।
বিচারক তার পরিচয় দেওয়ার পরও আসামিরা তাকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ ও মারধর করেন। স্বামীকে মারতে বারণ করলে বিচারকের স্ত্রীকে গলা টিপে হত্যার চেষ্টা করেন গাড়িতে থাকা দুই নারী। একপর্যায়ে বিচারক ও তার স্ত্রীকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন আসামিরা। পরে পথচারীরা এসে তাদের উদ্ধার করেন। মারধরে বিচারকের একটি দাঁতের কিছু অংশ ভেঙে যায়। এছাড়া তিনি হাতে ও বুকে আঘাত পান। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ওই রাতে চিকিৎসা নেন তিনি।
ওই ঘটনায় পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নাজির আবুল কালাম আজাদ। পাঁচলাইশ থানা পুলিশ পাঁচ আসামির মধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, রানা মরতুজা, তার বোন মাসুকা সুলতানা ও জিবান সুলতানা এবং গাড়িচালক আবদুর রহিম। সে সময় থানায় উপস্থিত ছিলেন, বিচারক অলি উল্লাহ অপুর গানম্যান পুলিশের কনস্টেবল আরিফুল ইসলাম।
তিনি আসামিদের বিভিন্ন কটুক্তিপূর্ণ মন্তব্য করতে শুনেন। আরিফুল ইসলাম জানান, আসামি মাসুকা সুলতানা বলছিলেন ‘নায়িকা পরীমণির মতো নাচতে নাচতে কারাগার থেকে বের হবো, বের হয়ে পরীমণির মতো সংবাদ সম্মেলন করবো। আমাদের কিছুই করতে পারবে না।’
এদিকে, গ্রেপ্তার চার আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পাঁচলাইশ থানা পুলিশ সাত দিন করে রিমান্ডের আবেদন করে আদালতে। শুনানি শেষে আদালত রানা মরতুজার পাঁচ দিন এবং গাড়িচালক আবদুর রহিমের তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। গ্রেপ্তার বাকি দুই আসামি মরতুজার বোন মাসুকা সুলতানা ও জিবান সুলতানার রিমান্ড আবেদন নামঞ্জুর করেন আদালত। শুনানিকালে আদালতে আসামিপক্ষের কোনো আইনজীবী ছিলেন না।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পাঁচলাইশ থানা-পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) সাদেকুর রহমান বলেন, রিমান্ড মঞ্জুর হওয়া দুই আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে। কেন, কী উদ্দেশ্যে তারা বিচারককে মারধর করেছেন, তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। গ্রেপ্তার মরতুজার দুই বোনকে আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়। পলাতক আসামি শিশিরকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
রানা মরতুজা বেলজিয়াম প্রবাসী। তার গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী। তিনি চট্টগ্রামে তার বোনের বাসায় বেড়াতে গিয়েছিলেন।
About Us
Contact Us
Privacy Policy
Terms Conditions
0 মন্তব্যসমূহ